এবার বাংলাদেশের চলমান ক্রান্তিকালীন সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়োজনে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত আইডব্লিউএএমএ কিমিনোরি। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অ্যাসোসিয়েশন অব ফর্মার অ্যাম্বাসেডরস (এওএফএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তৃতাকালে এ সহায়তার কথা বলেন তিনি।
এদিকে কিমিনোরি বলেন, বর্তমান কাঠামোর অধীনে কী প্রয়োজন, তা মূল্যায়ন করতে আমরা নতুন সরকারের অংশীজন ও বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যুক্ত হতে প্রস্তুত। স্পষ্ট করে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান হলো- নতুন সরকারের চাহিদা ও অনুরোধে সাড়া দেওয়া এবং সে অনুযায়ী সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়া।
ব্যবসা, প্রতিরক্ষা ও দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে কিমিনোরি বলেন, জাপান তার নিজস্ব সমাজ এবং বাংলাদেশে পরিচালিত জাপানি ব্যবসার স্বার্থের সঙ্গে তার প্রচেষ্টাকে একত্রিত করবে।
এদিকে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এওএফএ সভাপতি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল হাসান, রাষ্ট্রদূত গাউসুল আজম, রাষ্ট্রদূত শাহেদ আক্তার, রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক নাইলুর নাহার।
তিন শতাধিক জাপানি কোম্পানি বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি বলেন, এ দেশের ক্রান্তিকালীন সময়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ সত্ত্বেও এই কোম্পানিগুলোর কোনোটিই প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী সমাজের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জাপানসহ আরও বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন। আর এটি অর্জনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করতে আহ্বান জানান।
আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে বিনিয়োগ আকৃষ্টের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধা বলে মনে করেন এই রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, টোকিও চলমান পাবলিক-প্রাইভেট জয়েন্ট ইকোনমিক ডায়ালগের (পিপিইডি) মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পর্ক ও বিনিয়োগ বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) সঙ্গে চলমান আলোচনার কথাও তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগকে চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি বলেন, জাপান শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের পাশাপাশি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে সফর বিনিময়ের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস, শাসনব্যবস্থার উন্নতি ও দুর্নীতির মতো সমস্যাগুলো মোকাবিলার দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দোও বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের বাজার অন্বেষণ ও মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করছে। আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশের ব্যবসার পরিবেশ পুনঃস্থাপনের এটাই উপযুক্ত সময়। বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৫টি মন্ত্রণালয় রয়েছে। যা বাংলাদেশের সরকারি কাঠামোকে আরও বর্ধিত ও গতিশীল করতে পারে।